আসসালামু আলইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। ভালো থাকাটা সকলের প্রত্যাশা। আমি আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রতিদিনের জীবনে আমরা যা কিছু দেখি, যা কিছু আমাদের ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকে-তাদের ঘিরে কতই না প্রশ্ন মনে ভির করে। প্রশ্নগুলো অনেক সময় সহজ মনে হলেও বিজ্ঞানসম্মত উত্তর আর মেলে না। প্রাত্যহিক জীবনের এমনই কিছু প্রশ্ন আর তার উত্তর নিয়ে আমি আজ লিখছি।
আজকের বিষয় : ঋতু বদলায় কেন?
ঋতুর চরিত্র বদলায় আবহাওয়ার তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার জন্য। এই পরিবর্তনের কারণের পেছনে রয়েছে পৃথিবীর চলাফেরার রকম। পৃথিবী যেমন প্রতি ৩৬৫ দিনে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, তেমনই প্রতি ২৪ ঘন্টায় লাট্টুর মতো নিজের অক্ষ বা মেরুদন্ডের চারপাশে একবার পাক খেয়ে নেয়। নিজের অক্ষের চারদিকে পাক খায় বলেই পৃথিবীতে দিন ও রাত্রি হয়। ক্রান্তিবৃত্তের সাপেক্ষে পৃথিবীর অক্ষ একপাশে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলানো বলে পৃথিবীর বার্ষিক গতিপথে পরিক্রমার সঙ্গে সুর্যকিরণের নতিও বদলায়। প্রথমত, পৃথিবীর যে গোলার্ধ যখন সূর্যের দিকে হেলে থাকে সেই গোলার্ধ সেইসময় অধিকতর লম্বভাবে সূর্যকিরণ¯œাত হয় অর্থাৎ বেশি মাত্রায় তাপ পায়। যেমন, ২২ শে জুনের কাছাকাছি সময়ে হেলানো অক্ষের জন্য পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে থাকে, এবং সেখানে সূর্যকিরণ অপেক্ষাকৃত লম্বভাবে পড়ে। অর্থাৎ, রোদ তখন মাটিতে সবচেয়ে কম জায়গার ওপর পড়ে আর সেই কারণেই বেশি মাত্রায় উত্তপ্ত হয়। দ্বিতীয়ত, সেইসময় ওই গোলার্ধে দিনের ব্যাপ্তি দীর্ঘতর হয়, সে কারণেও বেশি মাত্রায় তাপ পায়। সর্বোপরি, আহ্নিক গতির ফলে, এই দুটি কারণের সমন্বয়ে পুরো উত্তর গোলার্ধটাই একইভাবে বেশি মাত্রায় উত্তপ্ত হয়।
শীতের দিনে ঠিক এর উলটোটাই ঘটে। তাই, কম মাত্রায় তাপ পাওয়ার অবস্থাটা ২২ শে ডিসেম্বরের কাছাকছি ঘটে দিন তখন সবচেয়ে ছোট হয় আর আবহাওয়ায় আসে শীতের পরশ। তা ছাড়া, সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়লে তাকে অনেক বেশি পুরু বায়ুস্তর পেরিয়ে আসতে হয়। এর ফলে বাতাস বেশি তাপ শুষে নেয়, অর্থাৎ সূর্যের আলো নিস্তেজ লাগে। শীতকালে এই ঘটনাটাই ঘটে গোটা দিন ধরে। মেরু অঞ্চলে সূর্যের আলো সবচেয়ে তির্যকভাবে পড়ে বলেই ওখানে শীতটা এত বেশি।
সূয-প্রদক্ষিণ-পথে ২২ শে জুনের পর পৃথিবী যতই এগোতে থাকে তার হেলানো অক্ষটি উত্তর গোলার্ধে সূর্যমুখী অবস্থা থেকে সরতে থাকে। ২২ শে সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি আসতে আসতে দিনের পরিসরও কমতে কমতে দিন আর রাত্রি দুটোই সমান সমান হয়ে দাঁড়ায়?। তাই তাপমাত্রা গরম ও শীতের মাঝামাঝি অবস্থায় থাকে। তখন উত্তর গোলার্ধে শরৎকালে আমেজ আসে। যা ‘জলবিষূব’ নামেই পরিচিত। ঠিক এর বিপরীত ব্যাপারটা ঘটে ২২ শে ডিসেম্বর থেকে ২২ শে জুনের পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার মাঝামাঝি সময়ে; অর্থাৎ ২২ শে মার্চ নাগাদ এই গোলার্ধে বসন্তের ছোয়া পাওয়া যায়। তখনও দিন রাত্রির মাত্রা সমান হয়ে যায় যেটা ‘মহাবিষুব’ বলেই পরিচিত।
চলুন নিচের ভিডিওটি দেখি
আজকের মতো এই পর্যন্ত আগামীতে আরো নতুন কিছু নিয়ে উপস্থিত হবো। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আর নতুন কিছু পেতে নিয়মিত আমার সাইটিতে ভিসিট করুন। পোস্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন। আল্লাহ হাফেজ।
No comments:
Post a Comment