Breaking

Saturday, January 11, 2020

চন্দ্রপ্রভা !!, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প গুলোঃ, লেখাঃ রওনাক ইফাত Leave a comment 1,250 Views

রাত আনুমানিক 12:30 হবে নীরা একা খাটে বসে আছে।খাটটা খুব সুন্দর করে সাজানো।শুধু খাটটা সাজানো বললে ভুল হবে আসলে পুরো রুমটাই অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে।লম্বা একটা ঘোমটা দিয়ে নববধূ যেভাবে বসে থাকে ঠিক তেমনি করে নীরাও বসে রয়েছে আর অপেক্ষা করছে রাতুলের আসার।আসলেই কি নীরা রাতুলের অপেক্ষা করছে নাকি অন্যকিছু তার এইভাবে বসে থাকার কারন?সময়ই তার উত্তর দিবে।যাইহোক সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে রাতুল ঘরে ঢুকলো আর ধীরে ধীরে নীরার দিকে এগিয়ে গেল।একসময় রাতুল যেয়ে নীরার পাশে বসলো আর নীরার ঘোমটাটা তুলে নীরার মুখটা দেখল।অন্যকোন বধূ হলে হয়ত বরের এই আচরনে লজ্জ্বায় তার দিকে না তাকালেও মুখে একটা লজ্জ্বামিশ্রিত মিষ্টি হাসি থাকত আর উঠে হয়ত তার বরকে সালাম করত যেটা প্রজন্মের পর প্রজন্মে আমাদের নিয়মে পরিণত হয়ে গিয়েছে।কিন্তু নীরার মাঝে সেসবের কোন লক্ষনই ছিলনা বরং সে যেভাবে বসেছিল ঠিক যেভাবেই অনঢ় বসে রইল।রাতুল নীরার এই আচরনে বিন্দুমাত্র অবাক হলনা বরং শান্ত গলায় বলল-

~যাও নীরা রাত অনেক হয়েছে এভাবে আর বসে না থেকে কাপড় পরিবর্তন করে আস।

.নীরারে দেখে মনে হচ্ছে রাতুলের কথা হয়ত ওর কান ভেদই করতে পারেনি তাই ঐ যেভাবে বসেছিল সেভাবেই বসে রইল।নীরাকে এভাবে বসে থাকতে দেখে রাতুল এবার নীরার হাতে ধরে হালকা ধাক্কার মত দিয়ে কথাগুলো আবার বলল।এবার মনে হল রাতুলের স্পর্শে ঐ চেতনা ফিরে পেল আর তৎক্ষনাৎ খাট থেকে নেমে বলল-

–দয়াকরে আপনি আমাকে স্পর্শ করবেন না।আপনার কাছে হাত জোর করে বলছি আমাকে আপনি স্পর্শ করবেন না।সবার কাছে আপনি আমার স্বামী হতে পারেন কিন্তু আমি আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে স্বীকার করিনা।আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে ধর্ম মতে আপনি আমার স্বামী তাই আপনি চাইলে জোর করে আমার উপর স্বামী হওয়ার অধিকার প্রয়োগ করতেই পারেন।কিন্তু মনে রাখবেন আমি কখনই এই বিয়ে স্বীকার করিনা তাই আমার কাছে আপনি একজন পরপুরুষ ব্যতীত আর কিছুইনা।

.নীরার কথা শুনে রাতুল স্তব্ধ হয়ে গেল মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছেনা ওর শুধু চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি পড়ে গেল।নীরা রাতুলের দিকে দৃষ্টিপাত না করে ফ্রেশ হতে চলে গেল আর রাতুল ঠায় বসে রইল।রাতুল চাইলেই সবকিছু তার হাতের মুঠোয় চলে আসে কিন্তু নীরার কাছে তার সকল ক্ষমতাই ব্যর্থ।কারন নীরাকে ঐ ভালোবাসে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসে তাই ওরকাছে রাতুল তার ক্ষমতার জোরে নয় বরং ভালোবাসার জোরে ওকে পেতে চায়।রাতুল জানেনা এরজন্য ওরে কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তবে নীরার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ঐ সারা জীবন অপেক্ষা করতে পারবে।শুধু পারবে না নীরাকে হারাতে কারন নীরাকে হারালে ঐ হয়ত কভু নিজেকেও খুঁজে পাবেনা।তাই নীরার দেয়া সব কষ্ট ঐ মেনে নিতে পারবে কিন্তু পারবেনা শুধু নীরাকে ছাড়া থাকতে।

নীরা কালো রঙের একটা শাড়ি পড়ে বের হল।রাতুল মুগ্ধ চোখে নীরার দিকে তাকিয়ে রইল।এমনিতেই মেয়েটার মায়ার শেষ নেই তার উপর ভেজা চুলে কালো শাড়িতে ওরে যে কি পরিমান সুন্দর লাগছে তা প্রকাশের ভাষা হয়ত রাতুলের জানা নেই।রাতুলের এই চাহনি নীরার মনের আগুনকে আরো বাড়িয়ে দিলো।নীরা বলল-

–আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাব।

~আচ্ছা তুমি শুয়ে পড়।আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।

.রাতুল বের হয়ে দেখে নীরা ফ্লোরে শুয়ে আছে।এখন এমনিতে হালকা শীত পড়েছে তাই নীরা এভাবে ফ্লোরে শুয়ে থাকলে নিশ্চিত ওর ঠান্ডা লাগবে তাই রাতুল বলল-

~কি ব্যাপার তুমি ফ্লোরে শুয়ে আছো যে ঠান্ডা লাগবে তো।

–আমার কিছু হবেনা আমি ঠিক আছি।

~না তুমি ঠিক নেই।যাও খাটে যেয়ে ঘুমাও।

–আমাকে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা।

~খাটে যেয়ে শুতে বলেছি।আর কোন কথা না বাড়িয়ে যা বলেছি তাই কর।

–আমি কখনই আপনার সাথে একখাটে থাকবনা।

~আমি কখন আমার সাথে থাকতে বললাম?তুমি খাটে ঘুমাও আমি মেঝেতে শুয়ে পড়ছি।আমার জন্যই যখন আজ তোমার এই অবস্থা তাই তুমি কেন আমি নিজে ঘুমাব ফ্লোরে।যাও তুমি গিয়ে শুয়ে পড় আমি এখানে শুয়ে পড়ছি।

.নীরা আর কোন কথা বাড়ালোনা কারন রাতুলের কোন বিষয়েই ওর কোন মাথাব্যাথা নেই।রাতুল ফ্লোরে বা বাহিরে শুয়ে থাকুক তাতে ওর কিছু আসে যায়না।রাতুল আর নীরা দুজনেই শুয়ে পড়ল কিন্তু কারো চোখে ঘুম নেই।নীরা তার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিজের চোখের পানিতে বালিশ ভিজাচ্ছে।আর রাতুল ওর ভালোবাসার মানুষকে এত কাছে পেয়েছে এটা ঠিক কিন্তু তার ভালোবাসাহীন চোখ রাতুলকে বিষধর সাপের মত প্রতিনিয়ত দংশন করছে।রাতুল নীরাকে আপন করেছে পেতে চেয়েছে তা ঠিক কিন্তু নীরাকে কখন ওরে এভাবে পেতে হবে এটা ঐ ভাবেনি।

যথাসময়েই সকাল হল আর নীরা উঠে বাহিরে যেতে নিল তখন রাতুল ওরে ডেকে বলল….
____চলবে____

বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Facebook Comments



No comments: